কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ - কাঁচা মরিচের ক্ষতিকর দিক

 প্রিয় পাঠক, খাওয়ার স্বাদে বাংঙ্গারিদের কাঁচামরিচ চাই ই চাই। এদেশের মানুষ কাঁচা মরিচ ছাড়া কোন খাবারের কথায় ভাবতে পারে না। কারণ কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ রয়েছে অনেক। কাঁচা মরিচের যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে তেমন এর ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে অনেক।

কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ
তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা মরিচ এ কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে। দিনে কয়টি কাঁচা মরিচ খাওয়া দরকার এবং এর ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

কাঁচা মরিচ খাওয়ার নিয়ম

আমরা অনেকেই ঝাল জাতীয় খাবার খেতে অনেক পছন্দ করি। আর এই ঝাল জাতীয় খাবার তৈরিতে সবচেয়ে যে উপাদানটি ব্যবহার করা হয় সেটি হল কাঁচা মরিচ। সাধারণত রান্নার কাজে কাঁচামরিচ ব্যবহার হয়ে থাকে।

এছাড়াও খাবারের পাশাপাশি অনেক ফলের সাথেও কাঁচামরিচ খাওয়ার যায় । তাই কাঁচা মরিচ খাওয়ার আগে মরিচকে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। আর রান্নার কাজে কাঁচামরিচ পিষে তরকারি রান্না করলে মরিচটি ভালোভাবে তরকারির সাথে মিশে যায় এবং তরকারিকে অনেক সুস্বাদু করে তুলে।

কাঁচা মরিচে এ প্রচুর পরিমাণে থিয়ামিন, আয়রন, নিয়াসিন ,আয়রন, ডায়েটারি ফাইবার ইত্যাদি উপাদান রয়েছে। তাছাড়াও কাঁচা মরিচ নিয়মিত খাইলে ভিটামিন এ এর অভাব পূরণ হওয়া সম্ভব। নিয়মিত কাঁচামরিচ খাইলে শরীরের জীবাণু বের হয়ে যায়। পাশাপাশি ক্যান্সার জনিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। তাই নিয়মিত কাঁচামরিচ খাওয়া আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজন।

কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ গুলা জেনে নিন

  • কাঁচামরিচ শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। গরমের সময় খাবারের সাথে কাঁচামরিচ খাইলে শরীরের ঘাম জাতীয় পদার্থ বের করে দেয়।
  • শরীরের মেদ কমাতেও কাঁচামরিচের রয়েছে অনেক গুণ। কারণ চর্বি জাতীয় খাবার এর সাথে কাঁচা মরিচ খাইলে শরীরের চর্বি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
  • কাঁচা মরিচের প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যারোটিন যুক্ত পদার্থ রয়েছে যা কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • মুখের ত্বক ও চুল ভালো রাখতে কাঁচামরিচের গুরুত্ব অনেক। কাঁচামরিচের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান হয় মুখের ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
  • কাঁচা মরিচের আরেকটি চমৎকার গুন হল। শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে এ কাঁচা মরিচ। ফলে শরীরের রক্ত চলাচল ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকে।
  • অন্তত প্রতিদিন দুইটি করে কাঁচা মরিচ খাইলে রক্ত জমাট বাঁধার যে ঝুঁকি তা অনেকাংশে কমে যায়। তাছাড়াও রক্তনালী গঠনে অনেক সাহায্য করে।
  • কাঁচা মরিচে ভিটামিন এ এর উপাদান রয়েছে। যা হার ও দাঁত ভালো রাখতে সহায়ক। এবং কাঁচামরিচের ভিটামিন সি এর পরিমাণ থাকায় চুলের গোড়া শক্ত করে থাকে।
  • কাঁচা মরিচ হজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। কাঁচা মরিচ খেলে যে কোন খাবার খুব সহজে হজম হয়ে যায়। ফলে বদহজম রোধ হয়।
  • নিয়মিত কাঁচামরিচ খাইলে আপনার বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করবে। কারণ কাঁচা মরিচ বয়স ধরে রাখার জন্য জাদুকরি উপাদান।
  • কাঁচামরিচ মস্তিষ্কের এন্ড্রোফিন হরমোন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে ব্রেন ফ্রেশ থাকে এবং মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

দিনে কয়টা কাঁচা মরিচ খাওয়া উচিত

কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুন রয়েছে ব্যপক। আপনি যদি নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেতে পারেন তাইলে আপনার ত্বক হবে অনেক উজ্জল। হয়তো অনেকেই ভয়ে কাঁচামরিচ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু কাঁচা মরিচে যে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে তা হয়তো অনেকেই জানেন না।

কাঁচা মরিচ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেয়। অন্তত প্রতিদিন দুইটা করে কাঁচা মরিচ খাওয়া সবার জন্য অপরিহার্য।কাঁচামরিচ আকারে ছোট হলেও এর কার্যক্ষমতা অনেক।

এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের জন্য উপকারী একটি উপাদান। তাই ডাক্তাররা অন্তত প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি কাঁচামরিচ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ।কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে অনেক কার্যকর।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে মরিচ খাওয়ার পরে শরীর অনেক অংশে গরম হয়ে যায়। ফলে যে কোন ধরনের ব্যথা কমতে সাহায্য করে। মরিচে থাকা ক্যাপসিন পেন রিফিলের ভূমিকা পালন করে থাকে।

কাঁচা মরিচের ক্ষতিকর দিক

কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুন রয়েছে যেমন অনেক। তেমনি এর অনেক ক্ষতিকারক দিক ও রয়েছে। কাঁচা মরিচের ক্ষতিকারক দিকসমূহ নিম্নে দেওয়া হল।

ঘুমের সমস্যা: অতিরিক্ত কাঁচামরিচ খাওয়ার কারণে ঘুমের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। আর ঘুমের সমস্যায় ভুগলে এর প্রভাব বিভিন্ন কাজ সমুহে পরে। কাঁচা মরিচ শরীরের অতিরিক্ত তাপ সৃষ্টি করতে পারে। এতে করে ঘুমের বিঘ্ন হতে পারে। তাই পরিমাণ মতো কাঁচামরিচ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

এ সকল সমস্যা সমাধানে অবশ্যই আপনাকে খাবারের দিকে দৃঢ় মনোযোগ দিতে হবে। তা না হলে উচ্চ রক্তচাপের হাত ধরে বিভিন্ন রকমের অসুখ সৃষ্টি হয়ে যাবে। কাঁচা মরিচ বা ঝাল জাতীয় জিনিস বেশি খাইলে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি হতে পারে।

অ্যসিডিটি সমস্যা: প্রায় ম্যাক্সিমাম মানুষেরই অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে। কাঁচা মরিচ এ এসিডিটির সমস্যা বেশি সৃষ্টি করতে পারে। যারা এসিডিটি সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে কাঁচামরিচ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

প্রজনন সমস্যা সৃষ্টি: যতই কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ থাকুক না কেন। কাঁচামরিচের কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রজনন সৃষ্টি করা। কারণ কাঁচামরিচ উচ্চমাত্রার তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে দেয়। তাই স্তন পান মায়েদের কাঁচামরিচ সেবন করা ঠিক নয়।

কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার অপকারিতা

এতক্ষণ কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ ও এর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে আপনাদের জানিয়েছি। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা লঙ্কার অপকারিতা গুলো ।এবং তাদের কাচা লঙ্কা খাওয়া একেবারে ঠিক হবে না।

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এমন ব্যক্তির: যে সকল ব্যক্তির কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তাদের কাঁচালঙ্কা খাওয়া একেবারে ঠিক হবে না। কারণ এর ফলে ব্যক্তির পাইলসের সমস্যা আরো বৃদ্ধি পেয়ে যাবে।

আলসার জাতীয় সমস্যা যাদের: আলসার জাতীয় সমস্যা যাদের রয়েছে তাদের কাঁচা লঙ্কা খাওয়া পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ মরিচের ঝাল খেলে ঘা অনেক বেড়ে যেতে পারে তখন সমস্যার সৃষ্টি আরও গুরুজ্বর হতে পারে।

হাঁপানি রোগীর ক্ষেত্রে: বেশি কাঁচা লঙ্কা খেলে হাঁপানি অনেক অংশে বেড়ে যাবে। তাই আপনি যদি হাঁপানি রোগে ভুগে থাকেন তাইলে কখনোই কাঁচালঙ্কা বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত হবে না।

কিডনির সমস্যা রয়েছে যাদের: যে সকল ব্যক্তির কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কাঁচা লঙ্কা খাওয়াটা একেবারে উচিত নয়। কারণ কাঁচালঙ্কা কিডনি সমস্যা দ্রুত সৃষ্টি করতে পারে।
তাই বলাই যায় যে কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুন যেমন অনেক তেমন এর কিছু খারাপ দিক ও রয়েছে। তবে নিয়ম মেনে কাঁচা মরিচ খাইলে শরিরের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে না।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ ও কাঁচা মরিচের ক্ষতিকর দিকসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি যদি সম্পূর্ণ পড়ে থাকেন তাইলে অবশ্যই উপকৃত হবেন। কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ অনেক।যদি আপনি পরিমাণ মতো কাঁচামরিচ খান তাইলে আপনার শরীরের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি হতে থাকবে। 

তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কাঁচামরিচ রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। আর যদি কারো পেটের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কাঁচামরিচ খাওয়া দরকার। আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার সাইটটি ফলো করতে থাকুন। এমন আরো সুন্দর সুন্দর টপিক নিয়ে আপনাদের মাঝে নিয়ে আসবো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url